নিজস্ব প্রতিনিধিঃকরোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কায়েস (৬৮) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছিলেন তিনি।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কায়েস সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ছিলেন।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব জুলহাস আহমদ বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসকরা সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এ কারণে গত রোববার (৭ মার্চ) কোনো অনুষ্ঠানে তিনি যাননি। রোববার তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে বিমানে ওঠার সময় হাঁপিয়ে পড়েন এবং বিমানের মধ্যেই অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে সরাসরি তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকেলে ফলাফল পজিটিভ আসে। অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তর করা হয় হাসপাতালে ভেন্টিলেশন বিভাগে। প্রায় পাঁচ দিন চিকিৎসার পর শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে এই সংসদ সদস্য করোনার টিকা নিয়েছিলেন। এরপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না। কয়েক দিন আগে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে গিয়েছিলেন তিনি।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকেই এমপি সামাদ সম্মুখে থেকে সেবা করেছেন জনসাধারণের। খাদ্য, অর্থ, ওষুধ বিলিয়েছেন বিরামহীনভাবে।
১৯৫৫ সালের ৩ জানুয়ারি জন্ম নেয়া মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ। ২০০৮ সাল থেকে তিনি টানা তিনবার সিলেট-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার বাবা আবদুস সামাদ চৌধুরী ১৯৯৬-২০০১ শাসনামলে শেখ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক টিভি ‘চ্যানেল এস’-এর চেয়ারম্যান ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কায়েস। সাত ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠ।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে সিলেটে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান জানিয়েছেন, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পরপর তিন বার এমপি নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা ছিলেন। তিনি জানান- বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ বৈঠকে বসবে। লাশ সিলেটে এলে হয়তো স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাফন করা হতে পারে।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি।
মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীরর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। এক শোকবার্তায় আমির হোসেন আমু মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।