নিজস্ব প্রতিনিধিঃবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের পেছনেই রয়েছে অধিকার হারানোর বেদনা। আর অধিকার হারানোর ওই বেদনা থেকেই অধিকার প্রতিষ্ঠার রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম।
রিজভী বলেন, ‘বায়ান্নর যে রক্তস্নাত চেতনা, সেদিনের যে আত্মত্যাগ সেটা আসলে ছিলো অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেটা আজও আমাদের উদ্বুদ্ধ করে, আমাদের সাহসী করে তোলে। আজও আমাদের যে অধিকার হারানো, গণতন্ত্র হারানো, কথা বলার স্বাধীনতা হারানো সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য জোটবদ্ধভাবে সংগ্রাম করছি, কথা বলছি, আমরা মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার, গুম ও খুনকে বরণ করে নিয়েও আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
রবিবার (২১ ফেব্রয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলের পক্ষ থেকে বায়ান্নর ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী আপনারা দেখেছেন স্বাধীনতার মূল যে স্পিরিট সেই গণতন্ত্র কে ভূলণ্ঠিত করা হয়েছে একদলীয় শাসনের মাধ্যমে। সব দল বন্ধ করে, সব গণমাধ্যম বন্ধ করে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণতন্ত্রের মুক্ত ধারা বইয়ে দিয়েছে। বাকশাল থেকে বহু দলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, মানুষের কণ্ঠের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তারই সহধর্মিণী, বেগম খালেদা জিয়া ৯ বছর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করা হয়েছে।’
বিএনপির এই শীর্ষনেতা নেতা বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বন্দী করেছে, কারণ তাকে বন্দী না করলে দিনের ভোট রাতে করা যেতো না। একদলীয় কতৃত্ববাদী শাসন, মাফিয়া তন্ত্র, ক্যাসিনোতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যেতো না। সেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলেই আজ তিন বছর বেগম খালেদা জিয়া বন্দী।’
তিনি বলেন, ‘বায়ান্নর চেতনা আমাদের চেতনাকে শাণীত করেছে, ধারালো করেছে বলেই আজও আমরা দৈত্যের ন্যায় একটা কতৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিএনপিসহ বিরোধী দল বিরোধীমত এক কাতারে দাড়িয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছি। এই চেতনার উৎসভূমি হচ্ছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন।’
এর আগে রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নেতৃত্বে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এ শ্রদ্ধা জানান।
শহীদ শফিউর রহমান, শহীদ আবুল বরকত ও শহীদ আবদুল জব্বারের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম ও সাবেক ছাত্র দলের নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।
আজিমপুরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারত শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে রওনা হন।