নিজস্ব প্রতিনিধি: গৌরনদী উপজেলার বাটাজোড় ইউনিয়নের চন্দ্রহার গ্রামে নির্মাণাধীন মসজিদে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের চাঁদা দাবি করায়পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষন কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা), বরিশাল-১ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঐ গ্রামের সন্তান প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাঁদাবাজির খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার পিতা মোঃ আনোয়ার হোসেন খলিফা (অবঃ সরকারি কর্মকর্তা) তার বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়েও গত ২ মাস যাবত প্রচন্ড ঠান্ডার কষ্ট সহ্য করে তার ওয়াকফ করে দেয়া সম্পত্তিতে স্থানীয় মুসুল্লিদের নিয়ে মসজিদ নির্মান করে আসছিলেন। গত একমাস যাবত পাশ্ববর্তী ৮ নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারি জব্বার ও সভাপতি পরিচয়দানকারী ঈমান আলী, মোবারক, ছালাম প্রায়শই আমার পিতার কাছে এসে আওয়ামী লীগ অফিসের খরচের জন্য টাকা দাবি করে। তাদের ভাষ্য – “আমরা চন্দ্রহার নিয়ন্ত্রণ করি। আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা না করে মসজিদ নির্মাণ করছেন কার অনুমতি নিয়ে? ”
একথা এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে চাঁদা দাবি কারী আওয়ামী লীগ নেতারা কৌশল হিসেবে মসজিদের চলাচলের রাস্তা নিয়ে সীমানা দেয়ার কৌশল অবলম্বন করে।
প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীম আরো জানান তিনি বরিশাল বিএম কলেজ শাখার ছাত্রলীগ থেকে অদ্যাবধি সেরনিয়াবাত পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ১৯৯৮ সালে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে গৌরনদীর চন্দ্রহার বন্দরে যে ক্লাব নির্মাণ করেছিলেন সেটাই বর্তমানে চন্দহার আওয়ামী লীগ অফিস এবং বর্তমানে সেই অফিসের নাম ভাঙ্গিয়েই কতিপয় অনুপ্রবেশকারী পূর্ব চন্দ্রহার গ্রামে নির্মাণাধীন মসজিদে চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ এই শিক্ষকের।
৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অফিসটি ৬ নং ওয়ার্ডের মধ্যে কিন্তু ৮ নং ওয়ার্ডের পদ পদবী বিহীন কিছু সাবেক সর্বহারার লোকজন এই অফিসটি দখল করে আছে। আমরা সভাপতি সেক্রেটারি এই অফিসে বসি না৷ এটা শামীম খলিফা করে দিয়েছিলো।
একই ওয়ার্ডের সেক্রেটারি মোঃ বাদশাহ জানান, ১৯৯৬ সালে শামীম খলিফাই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সাহস করে চন্দ্রহারে নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। চন্দ্রহার সেন্টারে তখন সর্বহারা দলের শত বাঁধা বিপত্তি ও হামলার শিকার হয়েও তিনি পৈতৃক দোকান নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিস করেছিলেন। তখন ঐ ক্লাব করেন নি। তার সেই পৈত্রিক দোকান যারা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছিলো, যারা খলিফা বাড়ির উপর বোমা হামলা করেছিলো তারাই আজ আওয়ামী লীগে প্রবেশ করে কুকর্ম করছে।
এদিকে প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীম তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ১৯৯৬ সালে জনগনকে নিয়ে তার রত্নগর্ভ শহীদ জননী চাচী মরহুমা সাহানারা বেগমের নেতৃত্বে চন্দ্রহার সেন্টারে আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ৭৮৬ ভোট এবং বিএনপি পেয়েছিলো ৮১৫ ভোট। তখন আমরা হিন্দু মুসলিম প্রত্যেকে ভালোবাসা দিয়ে কর্মী তৈরি করেছিলাম! ভোটাররা স্বতস্ফুর্তভাবে নৌকার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও পড়বো। নির্বাচনের পরের দিন আমার সেই পৈত্রিক দোকানটি আজকের এই সন্ত্রাসীরাই ভাংচুর করেছিলো।
অতঃপর আমার মাতৃতুল্যা চাচী এবং অভিভাবক মরহুমা সাহানারা বেগম নিজে বাটাজোড় ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদারকে নিয়ে দোকানটি সংস্কার করে দিয়েছিলেন।আজও এলাকাবাসী চাচীর সেই অবদানের কথা খুব মনে করে।
চন্দ্রহার বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান এই অনুপ্রবেশকারীরা দেড় বছর যাবত আওয়ামী লীগ অফিসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না। অফিসের মিটার শামীম খলিফার এক চাচার নামে। প্রায় ১৮০০০/- টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে আছে এবং সাইড লাইন দিয়ে প্রতিমাসে দোকানদারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিয়েছে। শালিস দরবারের নামে এমন কোন অপকর্ম নাই যে তারা করে না৷ যা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা চুপচাপ সহ্য করে যাচ্ছে।
বিষয়টি প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীম গৌরনদীর পৌর মেয়র, বাটাজোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি, ০৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার সহ ০৬ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারিকে অবহিত করেছেন।