নিজস্ব প্রতিনিধিঃরাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আদালতে রায় ঘোষণার সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মজনু বলতে থাকেন, ‘ আমি ধর্ষণ করিনি। মিলন, দুলাল, ইয়াছিন, আলামিন ধর্ষণ করেছে। তাদেরকে ধরেন। আমি ধর্ষণ কর নাই। মিলন, দুলাল, ইয়াছিন, আলামিন- এই চারজন ধর্ষণ করেছে। তাদেরকে ধরেন।’
এ সময় পুলিশকে হুমকি দিয়ে মজনু বলতে থাকে, ‘আমি ধর্ষণ করি নাই। বিনাদোষে আমারে আটকে রাখা হয়েছে। আমার হাতের হ্যান্ডকাপ খুলে দেন। নাইলে অবস্থা খারাপ হবে। কতো পুলিশ আছে আমি দেখে নেব। আমাকে ছেড়ে না দিলে আমি ব্রিজ থেকে লাফ দেব’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রায় ঘোষণার আগে পুলিশ পাহারায় তাকে আদালতে আনা হয়। এ সময় মজনু অস্বাভাবিক আচরণ করে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। বিলাপ করতে করতে মজনু বলতে থাকে, ‘ ভাই আমারে ছেড়ে দেন। আমি এতিম, অসহায়। আমারে মারলে আল্লাহ শাস্তি দিবে।’
আদালতে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মজনু বলেন, ‘ আমাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। আমি নির্দোষ। আমারে ছেড়ে দেন আমি বাড়ি চলে যাবো। আমি পাগল মজনু। আমি ভ্যান চালিয়ে খাবো।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন ৬ জানুয়ারি রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনম্যান্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্ত ও অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে রাতেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় মামলাটি তালিকাভুক্ত করে থানা কর্তৃপক্ষ।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মোবাইলের সূত্র ধরে ৮ জানুয়ারি রাজধানীর শেওড়া রেলক্রসিং এলাকা থেকে ধর্ষক মজনুকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) সদস্যরা। এসময় তার কাছ থেকে ওই ছাত্রীর ব্যাগ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
৯ জানুয়ারি পুলিশের করা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি নিয়ে মজনুকে ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালত। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে মজনু। সবশেষ গত ১৬ জানুয়ারি ধর্ষক মজনু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেন।