সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:বর্তমান করোনাভাইরাসের সংকটময় মুহূর্তে সরকার অসহায় দিনমজুর, অসচ্ছল পরিবারে ত্রাণ সহায়তার হাত বাড়ালেও দেশের বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ত্রাণ সহায়তা ও নামের তালিকায় একের পর এক অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করছেন। অসহায় পরিবারের পরিবর্তে ত্রাণে নামের তালিকায় অনেকে নিজের মা, শাশুড়ি, শ্যালক, মেয়ের জামাইয়ের নাম যুক্ত করেছেন। এর প্রতিবাদ করায় সাংবাদিককে দেখে নেবার হুমকি দিয়েছেন এক মেম্বার।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ৫ নম্বর বাদাঘাট ইউপিতে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি ত্রাণ সহায়তার অগ্রাধিকার তালিকায় এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড জাংগাল হাটি, লামা শ্রম, রাজারগাও, ডালার পাড়, লাউড়েরগড় গ্রামগুলো নিয়ে গঠিত। আর ওয়ার্ডের মেম্বার হলেন আ. হক। তার বাবার নাম সাদত আলী।
ইউএনও অফিসের তালিকা সূত্রে জানা যায়, সরকারি ত্রাণ সহায়তার জন্য আব্দুল হকের দস্তখতও সিলমোহরের নামের তালিকায় ৪৮টি নাম রয়েছে। তার মধ্যে নারী মেম্বার মনোয়ারা বেগমের জন্য বরাদ্দ ১০টি নাম। অবশিষ্ট ২৮টি নামের মধ্যে ১০ জন তার নিজ পরিবারের।
তালিকায় চার নাম্বারে রয়েছেন জরিনা খাতুন। তিনি মেম্বারের মা। তালিকায় ৩৫ নম্বরে রয়েছে আ. হকের নিজের নাম।
তালিকায় ২৯ নম্বরে তার শাশুড়ি, ৩০ নম্বরে শ্যালিকা, ২৪ নম্বরে শ্যালক ও ৩৭ নম্বরে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অপর এক শ্যালকের স্ত্রী নাম, ১৬ নম্বরে মেম্বারের মেয়ের জামাই যিনি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আর ৩১ নম্বরে রয়েছেন আপন মামা শ্বশুর।
মেম্বারের এমন অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতিতে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওই ওয়ার্ডের অসহায় কর্মহীনরা। তারা বলেন, এ মেম্বার আগেও ভিজিএফ, ঘরসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তালিকায় প্রকাশের পর স্থানীয় সাংবাদিক আলম সাব্বির বলেন, লাউড়েরগড় বাজারে শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি ফার্মেসিতে ওষুধ নিতে গিয়ে আ. হক মেম্বারকে পেয়ে বলি নিজের নাম বাদ দিয়ে অসহায় লোকজনের কথা চিন্তা করা উচিত। বর্তমান সময়ে সবাই বিপদে এক ঘরে তিনজনের নাম না দিয়ে দেখে শুনে দিলে কি হয়। এই কথা বলার পর মেম্বার আব্দুল হক রেগে খারাপ আচরণ করতে থাকেন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক ইউএনওকে মেম্বারের সামনে অবহিত করা হয়। পরক্ষণেই মেম্বার আমাকে বাড়ি যাওয়ার পথে দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আ. হক বলেন, আমি আমার নিজের ও মা’র নাম দিয়ে ভুল করেছি। ইউএনও স্যার বলেছেন নাম কেটে দিতে, আমি কেটে দিয়েছি। হুমকির বিষয়ে বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেইনি। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও বিজেন ব্যনার্জি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।