নিজস্ব প্রতিনিধিঃসামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মঙ্গলবার থেকে সেনাবাহিনী নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ সময় বিদেশ থেকে ফেরত আসা ব্যক্তির অবস্থান নির্ণয় ও তাদের নিজ নিজ অবস্থানে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করাই হবে সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নানা পরামর্শ আর নির্দেশনার পরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসেনি। বরং স্বাভাবিক সময়ের মতোই সবাই চলাচল করছেন। এমনকি, বিদেশ ফেরতরাও নিজেদের ইচ্ছামতো চলছেন।
এছাড়া দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বর্ধিত করে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ পেয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ির বাইরে খেলাধুলায় লিপ্ত রয়েছে।
এ অবস্থায় নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার (২৫ মার্চ) থেকে সারাদেশে একসাথে দুইজন চলাফেরা করতে পারবে না কেউ। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না, আর গেলেও তাকে জিজ্ঞাসাবের মুখোমুখি হতে হবে। আর এই নির্দেশনা নিশ্চিত করতে বুধবার থেকে মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ, সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতা নিশ্চিত এবং জনসমাগম রোধে প্রশাসনকে সহায়তা করতে চট্টগ্রামে টহল শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
বুধবার সকাল থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সহযোগিতায় নগরীর প্রতিটি এলাকায় টহল শুরু করেন সেনা সদস্যরা। এ সময় তারা বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গিয়ে অযথা রাস্তায় অবস্থান না নিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। ভিড় এড়িয়ে বাসায় ফিরে যেতে মাইকিংও করেন তারা। প্রথম পর্যায়ে অনুরোধ করলেও পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন সেনা সদস্যরা।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করা, কোথাও যেন জনসমাগম না হয়, কেউ যাতে খাদ্য মজুত করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করতে না পারে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেন কেউ বাড়াতে না পারে ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনা সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রস্তুতি নিতে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে শীর্ষ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক বসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে করোনায় দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪ জনে। এছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন। সব মিলিয়ে ৩৯ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব পেয়েছে আইইডিসিআর।
এর আগে ২৩ মার্চ সারা দেশে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।