নিউজ ডেস্ক : কার্ল মার্কস প্রুশিয়া সম্রাজ্যে জন্ম গ্রহন করেন। এটি ছিল নিম্ন রাইন প্রদেশের অন্তর্গত ক্রয়বৎ নামক স্থান। তিনি এক ইহুদি পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার নয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তিনি ছিলেন এমন বংশের লোক যার পূর্ব পুরুষেরা ছিল রাব্বি। তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যেত অতিবর্তী ও আলোকময়তার প্রভাব। তারা ভলতেয়ার ও রুশোর দার্শনিক মতবাদের অনেক প্রশংসা করতেন। তার বাবার নাম ছিল খুবা গড়ৎফবপযধর। আর তার মায়ের নাম ছিল ঊধ খাড়িঁ। হাইরিশ ইহুদি বংশে জন্ম গ্রহন করেন। কিন্তু তিনি ধর্মের কারণে আইন অনুশীলন করতে পারতেন না। এই জন্য তিনি ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে লুথারীয় মতবাদের দিক্ষা নিয়েছিলেন। তখন লুথারিয়া ধর্ম ছিল প্রুশিয়া সম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় প্রোটেস্ট্যান্ট। তাই তিনি রোমান ক্যাথিলিকদের রাষ্ট্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্যই ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।
কার্ল মার্কসের শিক্ষাঃ
তিনি প্রায় ১৩ বছর পর্যন্ত বাড়িতেই পড়ালেখা করেন। বাল্য কালের পড়া লেখা শেষ করে তিনি ক্রৎরবৎ এ ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৭ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রী পাস করেন। এরপর তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন ইউনিভার্সিটি অফ বনে। তিনি আসলে চেয়েছিলেন সাহিত্য ও দর্শন নিয়ে পড়া লেখা করতে। স্কলার হিসেবে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন না বলে তার বাবা মনে করত। কিছু দিন পর তার বাবা তাকে বার্লিনে বদলি করিয়ে দেন। সে সময় তিনি জীবন নিয়ে নানা ধরনের কবিতা ও প্রবন্ধ লিখতেন। তার লেখার ভাষা ছিল অতি ঈশ্বরবাদের ভাষা। তিনি ১৮৪১ সালে পিএইসডি ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। পি এইসডি অভিসন্দন তিনি বার্লিনে জমা দেননি , ইউনিভার্সিটি অফ জেনানা তে জমা দিলেন।
বার্লিনের বিশ্ববিদ্যালয় ২ ভাগে বিভক্ত ছিল। বাম পন্থি দলে ছিলঃ তরুন হোগালিয়ান, দার্শনিক ছাত্র আর লুডউইক ফায়েবার। জি ডব্লিউ ছিল শিক্ষক সমাজ। এরা ছিল পরস্পরের বিরোধী। হেগেলেরা ধর্ম ও রাজনীতি সমালোচনা করার জন্য দ্বান্দিক পদ্ধতি অনুসরন করত। আর হেগেলের অধিবিদ্যারা অনুমিতি গুলোর সমালোচনা করত।
প্যারিস ও ব্রাসেলসঃ
মার্কস ১৮৮৩ সালের শেষের দিকে প্যারিসে আসেন। প্যারিস তখন র্জামানি , ব্রিটিশ , পোলীয় ও ইতালিদের সদর দফতরে পরিনত হয়ে উঠে। ১৮৪৪ সালের দিকে আরও এক বার তিনি প্যারিসে আসছিলেন। তিনি তখন ইংল্যান্ডের কর্মজীবী মানুষের অবস্থা সম্পর্কে অভিহিত হলেন। কারণ ১৯৪২ সালে এঙ্গেলেসের সাথে তার এ নিয়ে কথা হয়েছে।
১৮৪৮ সালে ইউরোপে অনেক বিপ্লব সংগঠিত হয়। তখন অনেক কিছুই বদলে যায়। এ সময় মার্কসকে বন্দি করা হয়। বেলজিয়াম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে ফ্রান্সের রাজাকে বলে মার্কসকে প্যারিসে আনার ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় প্যারিসে জুন ডেইস বিপ্লব সংগঠিত হয় যা মার্কস প্রত্যক্ষ করেন।
১৮৮২ সালের মার্কসের পারিবারিক জীবনের কিছু অংশঃ
মার্কস বিয়ে করেছিলেন জেনি ফণ ভেস্টফালেনকে। জেনি ছিলেন প্রুশীয় ব্যারনের অতি শিক্ষিত কন্যা। তাদের এ সম্পর্কের বিষয় ছিল অনেক গোপন। কারণ এ বিয়েতে মার্কস পরিবারের কোন সম্মতি ছিল না। ১৮৪৩ সালের ১৯ জুন তাদের বিয়ে হয়েছিল। ১৮৮১ সালের ডিসেম্বরে জনি মারা যায়। এরপর মার্কস এক ধরনের রোগে আক্রন্ত হয়। এ রোগটি তাকে প্রায় ১৫ মাস অসুস্থ করে রাখে। এ রোগটি শেষে ব্রঙ্কাইটিসে পরিনত হয়। ১৮৮৩ সালের ১৪ মার্চ তিনি মৃত্যু বরন করেন। মৃত্যুর সময় তার কোন জাতীয়তা বা দেশ ছিল না। ১৭ মার্চ তাকে লন্ডনের হাইগেট সেমিটারিতে সমাহিত করা হয়েছিল। ২ টি বাক্য লেখা আছে তার সমাধি ফলকে।
১। কমিউনিস্টের শেষ লাইনঃ “ দুনিয়ার মজদুর এক হও”।
২। ১১ তম থিসিস আন ফায়ারের বিখ্যাত উক্তিঃ “ এত দিন দার্শনিকরা কেবল বিশ্বকে বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে গেছেন , কিন্তু আসল কাজ হল পরিবর্তন করা”।