ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সেই ধর্ষক মোহাম্মদ আলীকে আটক করেছে আখাউড়া থানা পুলিশ।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নতুন বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ধর্ষিতা গৃহবধূকে মেডিকেল পরিক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল ফরেন্সিক বিভাগে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর জবানবন্দী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের কমর উদ্দিনের ছেলে আদম পাচারকারী মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর মধ্য দিয়ে আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামের নোয়ামুড়া গ্রামের হনুফা বেগম (৪০) সঙ্গে পরিচয় গড়ে উঠে।
২৮ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে একা থাকার সুযোগে প্রবাসী ছেলের সুখবর আছে বলে ঘুম থেকে ডেকে তোলে হনুফাকে। এসময় গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে মোহাম্মদ আলী। ওই গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে আটক করে অপ্রীতিকর অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে।
ওই রাতেই বিষয়টি কাউকে কিছু না জানাতে এবং এর ন্যায্য বিচার পাইয়ে দিতে গৃহবধূর পরিবারকে চাপ দেয় ধর্ষকের পরিবার ও গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ এলাকার প্রভাবশালীরা। পরে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে রায় করে দেয় ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীর ও স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বররা।
ভিকটিমের স্বামী আবুল কাশেম বলেন, ৫ জুলাই রাতে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীর আমাকে ও আমার স্ত্রীকে ডেকে পাঠায়। এসময় বিষয়টি নিয়ে ভাড়াভাড়ি না করে ২লাখ টাকায় আপোষ মিমাংসার কথা বলেন চেয়ারম্যান। এসময় এলাকার প্রভাবশালী মাতব্বর মলাই মিয়া, রুবেল, জহির ও জাকির মেম্বার উপস্থিত ছিল। ওই টাকা পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে আমার স্ত্রীর কাছে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও টাকা আর দেয়নি তারা। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলে কোন বিচার না পেয়ে ধর্ষিতা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রোববার আখাউড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আরিফুল আমিন জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সকালে ধর্ষককে আটক করা হয়েছে। ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষক মোহাম্মদ আলীকে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা কারাগারে সোপর্দ করা হয়েছে।