বিনোদন ডেস্ক:ঢাকাই সিনেমার মহানায়ক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন একজনই। যিনি আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের অন্তরে অমর হয়ে আছেন। সুদর্শন, সুশিক্ষিত, মার্জিত, রুচিশীল এই অভিনেতা অভিনয় গুণে সব শ্রেণির দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলেন। ঢাকাই সিনেমাতে নতুন এক মাত্রা। বলছি প্রয়াত দেবদাস খ্যাত অভিনেতা বুলবুল আহমেদের কথা।
আজ রোববার (১৫ জুলাই) দেশিয় চলচ্চিত্রের এই ‘মহানায়ক’র নবম মৃত্যুবার্ষিকী। ঢাকাই ছবির নন্দিত অভিনেতা বুলবুল আহমেদের মৃত্যু দিবসে তার আত্মার শান্তি কামনায় শ্রদ্ধাঞ্জলি পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজের পক্ষ থেকে।
২০১০ সালের ১৫ জুলাই তিনি পৃথিবীর সাথে সমস্ত মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তার পরিবার।
তার মেয়ে ঐন্দ্রিলা বলেন, বাবা সবসময় মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে ভাবতেন। বাবা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপন দেখতেন। তার দেখা স্বপ্নগুলো পূরণ করতে আমরা তার নামে বুলবুল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট নামে একটা সংগঠন করেছি। এই ফাউন্ডেশন থেকে আমরা গরীব, অসহায় মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। আমরা ২০১৫ সাল থেকে ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি।
তিনি আরো বলেন, এই ফাউন্ডেশন থেকে বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে আমরা গুণীজনদের সম্মাননা প্রদান করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার ১৪ জুলাই বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে সম্মাননা দিয়েছি। আজ বাবার মৃত্যু দিনে তার মতো করেই কিছু মানুষদের খাওয়ানো হবে, দোয়া চাওয়া হবে। সবাই দোয়া করবেন আব্বুকে যেন আল্লাহ বেহেস্ত নসীব করেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বুলবুল আহমেদ।। তার আসল নাম তাবারক আহমেদ। আদর করে তার বাবা-মা বুলবুল বলে ডাকতেন।
পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করার পর তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন তিনি।
দাম্পত্য জীবনে বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তান হলেন- মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ।
চাকরির পাশাপাশি বুলবুল আহমেদ টিভিতে অভিনয় শুরু করেন। বুলবুল আহমেদ অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ছিলো আবদুল্লাহ আল মামুনের ১৯৬৪ সালে বিটিভিতে প্রচারিত হয়।
তার উল্লেখযোগ্য অভিনীত টিভি নাটকগুলো হচ্ছে- মালঞ্চ, ইডিয়েট, মাল্যদান, বড়দিদি, আরেক ফাল্গুন, শেষ বিকেলের মেয়ে। ধারাবাহিক ও খন্ড নাটক মিলিয়ে প্রায় চার শতাধিক নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত সর্বশেষ টিভি নাটক ছিল ২০০৯ সালে শুটিং করা ‘বাবার বাড়ি’।
বুলবুল আহমেদ ১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের (ইউসুফ জহির) ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন।
ঢাকাই ছবির দর্শকের কাছে চিরস্মরণীয় তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি দুই চরিত্র ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’- এ দুর্দান্ত রূপদান করার জন্য। ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’ ও ‘দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সকল শ্রেণির দর্শকের অন্তরে।
এছাড়াও ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্য কন্যা’, ছবিগুলো বুলবুল আহমেদকে নিয়ে যায় অন্য স্তরে।