যশোর প্রতিনিধি:যশোরে সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার লিটনের শোকে স্ট্রোক করে মারা গেছেন তার বোন শাহনাজ আক্তার শাবানা। হত্যাকাণ্ডের একদিন পর রোববার তিনি স্ট্রোক করে সোমবার ভোরে মারা যান। নিহত লিটনের কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
নিহত লিটন যুবলীগ শহর শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং ঘোপ নওয়াপাড়া রোড বাইলেন এলাকার আব্দুল মুনাফ মুনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে লিটনসহ ১০/১২ জন ঘোপ সেন্ট্রাল রোড যুবলীগের আঞ্চলিক কার্যালয়ে বসে টেলিভিশনে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখছিলেন। রাত ১০টার দিকে হামলকারীরা যুবলীগের ওই কার্যালয়ে ঢুকে দুইটি বোমা মারে। লোকজন ভয়ে পালিয়ে গেলে তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে লিটনকে ছরিকাঘাত করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে লিটনকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। রাতে ঢাকায় নেয়ার পথে ফরিদপুরে পৌঁছালে অ্যাম্বুলেন্সে লিটনের মৃত্যু হয়। শনিবার বাদ আছর ঘোপ সেন্ট্রাল রোড স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদ প্রাঙ্গণে নিহতের নামাজে জানাজা শেষে ঘোপ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে, লিটনের হত্যার পর থেকেই তার বোন শাহনাজ আক্তার শাবানা আহাজারি করতে করতে বারবার মূর্ছা যেতে থাকেন। এরই মধ্যে রোববার বিকেলে তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। তাকে দ্রুত যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। ঢাকা নেয়ার পথে অবস্থার অবনিত হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লিটনের মেজ বোন নাজমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, তার ছোট বোন শাবানা নিঃসন্তান হওয়ায় লিটনের দুই সন্তানকে সেই মানুষ করতো। লিটনকেও সে খুবই ভালবাসতো-স্নেহ করতো। লিটনের হত্যার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে সেও চলে গেলো।
শাহানার লাশ সোমবার সকালে যশোরে ফিরিয়ে আনা হয়। বাদ জোহর সেই একই স্থান ঘোপ সেন্ট্রাল রোড স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে ঘোপ কবরস্থানে লিটনের কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
শাবানার নামাজে জানাজায় অংশ নেন যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল। তিনি জানান, ভাই হত্যার শোকে বোনের এভাবে চলে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। তিনি লিটন হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের শাস্তিরও দাবি জানান।