নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কবি সুফিয়া কামাল রচিত সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে গভীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে।
তিনি বলেন, সুফিয়া কামালের জীবন ও আদর্শ এবং তাঁর অমর সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের প্রেরণার চিরন্তন উৎস হয়ে থাকবে।
কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
আজ বুধবার নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম সুফিয়া কামালের ১০৭তম জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন বাংলাদেশের নারী সমাজের এক উজ্জ্বল ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, কবি সুফিয়া কামালের জন্ম ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তৎকালে বাঙালি মুসলমান নারীদের লেখাপড়ার সুযোগ একেবারে সীমিত থাকা সত্বেও তিনি (সুফিয়া কামাল) নিজ চেষ্টায় লেখাপড়া শেখেন এবং শৈশব থেকেই কবিতা-চর্চা শুরু করেন। তার কবিতায় ব্যঞ্জনাময় ছন্দে ফুটে উঠত সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের সার্বিক চিত্র। কবির প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশিত হয় সওগাত পত্রিকায় ১৯২৬ সালে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’ ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত হলে রবীন্দ্রনাথ এ কাব্য পড়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ কাব্যের ভূমিকা লিখেন কাজী নজরুল ইসলাম।
সুফিয়া কামাল সুদীর্ঘকাল ধরে সাহিত্যচর্চা, সমাজসেবা ও নারী কল্যাণমূলক নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন,নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার সাথে সুফিয়া কামালের সাক্ষাৎ ঘটে ১৯১৮ সালে কলকাতায়। বেগম রোকেয়া ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি নারী সমাজকে কুসংস্কার আর অবরোধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদেরও তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, সুফিয়া কামাল দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। নারীদের সংগঠিত করে মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা, দেশাত্মবোধ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন সর্বদা সচেষ্ট। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ একটি মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছিল সুফিয়া কামালের জীবনব্যাপী সংগ্রামের প্রধান লক্ষ্য।
রাষ্ট্রপতি এ মহীয়সী নারীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
সূত্র : বাসস