বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০২:৪০ অপরাহ্ন

কক্সবাজারে আরেক ‘সেন্টমার্টিন’

ক্রাইম ফোকাস ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ২০৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃবাংলাদেশের সেরা পর্যটন গন্তব্য হচ্ছে কক্সবাজার জেলা। শুধু বাংলাদেশি নয়, সারাবছরজুড়েই বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় পৃথিবীর এই বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতটি মুখরিত থাকে সারাক্ষণ। আর এই জেলারই একটি দৃষ্টিনন্দন স্থান হলো মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ। অনেকেই এই দ্বীপের সৌন্দর্যকে সেন্টমার্টিনের সঙ্গে ‍তুলনা করে থাকেন। অনেকের মতে, কক্সবাজার ভ্রমণে গিয়ে জায়গাটিতে না গেলে ভ্রমণটাই বৃথা!

পাখির কোলাহল আর সাগরের গুন-গুন শব্দে সবসময় মুখরিত থাকে সোনাদিয়া দ্বীপ। এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিমি। কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে এবং মহেশখালি দ্বীপের দক্ষিনে সোনাদিয়া দ্বীপটি অবস্থিত। একটি খাল দ্বারা এটি মহেশখালি দ্বীপ থেকে বিছিন্ন হয়েছে। তিন দিকে সমুদ্র সৈকত, সাগর লতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া- নিশিন্দার ঝোপ, ছোট-বড় খাল বিশিষ্ট প্যারাবন এবং বিচিত্র প্রজাতির জলাচর পাখি দ্বীপটিকে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত।

মহেশখালী থেকে সোনাদিয়া দ্বীপ যেতে পথের সবকিছুই মনে হবে শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোনো এক অকৃত্রিম ছবি চোখের সামনে ভাসছে। এ দৃশ্য যেনো কোনোদিন ভোলার নয়। এখানকার খালের পানি এতোটাই স্বচ্ছ ও টলটলে, দেখে মনে হবে যেন কোনো কাঁচের ওপর দিয়ে নৌযানটি এগিয়ে চলেছে। যা দেখলে শত বছরের দুঃখ-কষ্ট এক নিমেষেই ভুলে যেতে বাধ্য। সমুদ্র থেকে সৃষ্টি হয়ে ভিতরের দিকে গিয়ে খালটি কয়েকটি শাখা প্রশাখায় ছড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। খালের দু-পাশে সবুজ বন। এসব বনে রয়েছে কেওড়া, হারগোজা, উড়িঘাস এবং কালো ও সাদা বাইন বৃক্ষ।

সোনাদিয়া দ্বীপের মোট জনবসতি প্রায় ২০০০ জন। এই দ্বীপে ২টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাইক্লোন সেন্টার, আনুমানিক ১২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। মাছ ধরা এবং মাছ শুকানো, চিংড়ি ও মাছের পোনা আহরন দ্বীপের মানুষের প্রধান পেশা। কিছু মানুষ ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও কাঠের সাধারণ নৌকা এবং উহা চালানোর সহকারী হিসাবে কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করে। চারিদিকে নোনা পানি বেষ্টিত হওয়ায় এই দ্বীপে তেমন কোনো খাদ্য শষ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।

সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের থাকার জন্য কোনো আবাসিক হোটেল নেই। খাওয়ারও তেমন কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় লোকজনকে টাকা দিলে তারা খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। আর সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রি যাপনের ক্ষেত্রেও ভরসা স্থানীয় বাসিন্দাদের। তবে রাতে থাকার কষ্টের কথা চিন্তা করে যারা সূর্যোদয়ের আগেই ফিরে আসবেন তারা সোনাদিয়া দ্বীপের আসল সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হবেন। এখানকার সূর্যাস্ত আরো অসাধারণ। সন্ধ্যায় সাদা পালক দুলিয়ে সারি সারি বক উড়ে যায় আপন ঠিকানায়। নীল আকাশের কপালে কে যেনো দেয় লাল টিপ। আস্তে আস্তে যখন সূর্য হারিয়ে যায় সাগরের বুকে তখন তৈরি হয় এক মোহনীয় পরিবেশ। আর সোনাদিয়া দ্বীপে রাত্রিযাপন হতে পারে আপনার জীবনের সেরা রাতের একটি।

কক্সবাজার থেকেও সরাসরি স্পিডবোট রিজার্ভ করে সোনাদিয়া দ্বীপে যাওযার ব্যবস্থা রয়েছে। সে জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। যারা ভ্রমণকে অ্যাডভেঞ্চারময় করতে ভালোবাসেন তারা কিছু বাড়তি খরচ করে কক্সবাজার থেকে সরাসরি স্পিডবোটে করে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে পারেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর