নিউজ ডেস্কঃ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে গড়তে হবে। আমরা দেশকে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।
রোববার (১০ জুন) স্থানীয় সময় বিকেলে মেট্রো টরন্টো মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে কানাডিয়ান আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আর স্বাধীনতা বিরোধী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসের মদতদাতা বিএনপি-জামায়াত আবার ক্ষমতায় এলে দেশটা রসাতলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেটুকু করতে চেয়েছি তার চেয়ে বেশি কাজ করেছি। বিদ্যুৎ, শিক্ষা, চিকিৎসা, অবকাঠামো উন্নয়ন, মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। এসময় আগামীতে দেশকে আরো উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
উন্নয়ন-অগ্রগতিতে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে বলেই জি-৭ আউটরিচ সম্মেলনে তারা বাংলাদেশকে দাওয়াত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বিগত সময়ে বিএনপি জামায়াত সরকারের বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি যেন অব্যাহত থাকে সবাইকে সে বিষয়টা দেখতে হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ও সে সময়কার সহিংসতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে নির্বাচনী অপকর্ম বিএনপি ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শুরু করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, এদেশের জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জনগণের ভোট কেড়ে নেয়ার সংস্কৃতি চালু করেছিলেন তিনি। নির্বাচনী অপকর্ম তারা শুরু করেছে।
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ-না ভোট ও তখনকার গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেসময় তারা মুখে বলতো গণতন্ত্র। কিন্তু প্রতিরাতে কার্ফিউ থাকতো। আমি সেসময়কে বলি কার্ফিউ গণতন্ত্র।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছি। আন্দোলন সংগ্রাম করে নির্বাচনে সুষ্ঠু ধারা প্রতিষ্ঠিত করেছি।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে দাবি করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিভিন্ন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন নির্বাচনে তাদের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। আমরা তো জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে যাইনি।
দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবাসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরাধীদের একদিন না একদিন সাজা পেতেই হয়। আর এতিমের টাকা মেরে খাওয়া আল্লাহও পছন্দ করেন না। বিদেশ থেকে এতিমদের নাম করে টাকা এনে নিজে খেয়েছেন। একটা টাকাও এতিমদের জন্য খরচ করেনি।
খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো সাজা দেইনি। আদালত সাজা দিয়েছেন। বিএনপির এত বড় বড় আইনজীবী তারা তো প্রমাণ করতে পারেনি খালেদা জিয়া নির্দোষ।
তিনি আরো বলেন, আমি যদি রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করতাম তবে যখন সন্ত্রাস করেছে, মানুষ খুন করেছে তখনই গ্রেফতার করতে পারতাম।
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো রহমান মারা যাওয়ার খবর পেয়ে দেখতে গিয়ে বাড়িতে ঢুকতে না পারার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাইলে ওই দিন বাইরে থেকে আরো দুটো তালা মেরে পুলিশ পাহারা বসিয়ে আসতে পারতাম।
প্রবাসীদের এক সঙ্গে মিলে মিশে থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসে মিলেমিশে থাকাটা জরুরি। কানাডায় পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত নিতে প্রবাসীদের সহযোগিতা চান তিনি।
কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ মাহমুদ মিয়ার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।