শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বরিশালের নাজেম’স রেস্তোরা

ক্রাইম ফোকাস ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ জুন, ২০১৮
  • ১৬৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেশ আয়েশে রয়েছে বরিশাল নগরীর নাজেম রেস্তোরার স্বত্ত্বাধিকারী রেজা। কুটকৌশলে ভ্যাট কর্মকর্তাকে অন্ধকারে রেখে নাম মাত্র ভ্যাট দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সূত্রে জানা গেছে, রেস্তোরার খাবার বিক্রিতে ৭% ও ফাস্টফুড বিক্রি করলে ১৫% ভ্যাট আরোপের আইন রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় নাজেম রেস্তোরা তার মাসিক বিক্রির ভিত্তিতে ভ্যাট দিচ্ছে ৬/৭ হাজার টাকা। কিন্তু সরেজমিন সূত্রে বিস্তর ভ্যাট ফাঁকিবাজি দেখা গেছে। এনিয়ে অনুসন্ধানসূত্রে আরো জানা গেছে, চলতি রমযানে শুধু ইফতার বিক্রি হয় দৈনিক প্রায় ৩/৪ লাখ টাকা। স্থানীয় একাধিকসূত্র জানায়, নাজেম রেস্তোরার বিরিয়ানি ও বাহারি ইফতার ইতিমধ্যেই নগরবাসির নজড় কেড়েছে। শুধু তাই নয় ভিআইপি অনুষ্ঠান গুলোতেও নাজেম রেস্তোরার বিরিয়ানি ও ইফতার সরবরাহ হয় বেশি এবং কোম্পানি গুলোর প্রোগ্রামেও এদের খাবারের বেশ চাহিদা রয়েছে। এ সময় বগুড়া রোডস্থ বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম, রনকসহ একাধিক বাসিন্দা জানায়, প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাজেম রেস্তোরায় এত ক্রেতা ভিড় থাকে যে সড়কও বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১৮/২০ ধরণের ইফতার বিক্রি হয়। একেকজন ক্রেতা কমপক্ষে ৩/৬শ টাকার ইফতার কিনে নেয়। এতে দৈণিক প্রায় ২/৩ লাখ টাকার ইফতার বিক্রি হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। নাজেম রেস্তোরায় শুধু রমযান মাসেই ইফতার কেন্দ্রিক বেচাকেনার পরিমাণ হয় প্রায় ৬০ থেকে ৮০ লাখ টাকা। এছাড়াও রমযান পরবর্তী সময় গুলোতে দৈণিক প্রায় ৩০/৫০ হাজার টাকার বিরিয়ানি বিক্রি হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এদিকে মোটা অংকের এ ভ্যাট ফাঁকি দিতে বিক্রয় কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহার করেনি ইসিআর পদ্ধতি। কারণ এ পদ্ধতিতে ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কম থাকে। এতে দৈণিক বিক্রির একটি স্বয়ংক্রিয় রেকর্ড থাকে যন্ত্রটিতে। অথচ নগরীর কাস্টমস এক্সাসাইজ ও ভ্যাট দপ্তরসূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে রেস্তোরা, জুয়েলারি, পোশাকসহ ব্যবাসা প্রতিষ্ঠানে ইসিআর যন্ত্র ব্যবহার বাধ্যতামুলক। কিন্তু প্রথমে অনুরোধ করা হয় এরপরও কাজ নাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গৃহীত হয়। অথচ নাজেম রেস্তোরায় ভ্যাট প্রদাণের বিষয়ে অনুসন্ধানসূত্রে জানা গেছে, মাসে ৫/৭হাজার টাকা ভ্যাট দিয়ে মোটা অংকের ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ত্বাধিকারী মো:রেজার ০১৭৪২০৮০৮.. এই নাম্বারে ফোন করলে জানায়, এ বিষয়ে আপনাকে বলবো কেন বলেই উত্তেজিত হয়ে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে এবং বলে কখনো আর এ বিষয়ে আমার কাছে তথ্য জানতে চাইবেন না বলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। রেজার এহেন কর্মকান্ডের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সে একসময় নারী অপহরণ মামলারও আসামি ছিলো এবং তার একটি বাহিনী রয়েছে ব্যবসায়িক কালো অধ্যায় গুলো টিকিয়ে রাখার জন্য। অপরদিকে নাজেম রেস্তোরার ভ্যাট ফাঁকির ব্যাপারে কাস্টমস এক্সাসাইজ ও ভ্যাট দপ্তরের সহকারী কমিশনার মো: নেয়ামুল হাসান বলেন, কোন প্রতিষ্ঠান যদি ভ্যাট ফাঁকি দেয় তাহলে তা খতিয়ে দেখে বকেয়া ও সুদ সমেত আদায় করা হবে। কোন প্রকার মিথ্যা তথ্য দিলেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু নাজেম রেস্তোরায় প্রতিদিন যে ধরণের বিক্রি হয় তাতো আপনাদের নজড়ে না আসার কারণে মোটা অংকের ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে নামে মাত্র ভ্যাট দিয়ে সরকারকে গচ্ছা দিচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন, ওখানে আমাদের পক্ষ থেকে আরো মনিটরিং বাড়ানো হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর