সম্পাদকীয়
বুধবার জাতীয় সংসদে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত বক্তব্য থেকে জাঁতি আরেকটি সুসংবাদ পেল। গত মাসে মহাকাশে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর সফল উৎক্ষেপণের এক মাস পূর্তি না হতেই জাঁতি পেল নতুন আরেকটি স্যাটেলাইট নির্মাণের প্রস্তুতি গ্রহণের সুসংবাদ। প্রথম স্যাটেলাইটের মেয়াদ যেহেতু পনেরো বছর তাই পরবর্তী স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-২-এর নির্মাণ প্রস্তুতি সরকার এখনই শুরু করতে চাইছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার ও উস্কানিমূলক অপপ্রচারের জবাব দেন।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘এই স্যাটেলাইটের মালিকানা বাংলাদেশের, বাংলাদেশ সরকারের। যারা এর মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা অর্বাচীন’। তিনি জানিয়েছেন দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নিক্ষেপের পর তৃতীয় স্যাটেলাইট প্রস্তুত করা হবে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে দেশকে আধুনিক প্রযুক্তির ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ৫ বছরের মধ্যে দেশকে মহাকাশে নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে। অস্বীকারের কোন কারণ নেই যে, এখন সাগরের তলদেশ থেকে মহাকাশ পর্যন্ত বাংলাদেশের মর্যাদা উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত।
স্মরণযোগ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশীল, স্বনির্ভর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট যোগাযোগের সূচনা হয়। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগে মহাশূন্যে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। স্বপ্নের স্যাটেলাইট নির্মাণ ও এর সফল উৎক্ষেপণে জাঁতি গর্বিত ও আনন্দিত। মহাকাশে আজ বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এ গৌরব নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সরকারের, এ গৌরব দেশের ১৬ কোটি মানুষের।
এটা উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে যে, আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশকে নিয়ে বিদেশীরা নানা সময়ে নানা ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করেছে। তলাবিহীন ঝুড়ি আর বন্যা-মারী-দুর্ভিক্ষের দেশ হিসেবেও প্রচার করা হয়েছে। এ দেশের নাগরিকরা দরিদ্রÑ এমন একটি তাচ্ছিল্যও করা হয়েছে নানা সময়ে নানা দেশে। কিন্তু বাংলাদেশ যে একের পর এক উন্নতি করে চলেছে, তার সোনার সন্তানরা দেশের বাইরেও সুনামের সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং নতুন নতুন সব সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখিয়ে চলেছে, সেটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একটু একটু করে প্রচারিত হচ্ছে। এখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দিলে সেটিও উন্নত সব দেশে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় এক অনন্য অর্জন হলো মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের উৎক্ষেপণ। গত ১১ মে গভীর রাতের পর থেকে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় আর একটি গৌরবের অংশীদার হতে পেরেছে। এখন মহাকাশে বাংলাদেশের একটি স্যাটেলাইট রয়েছে। সেই স্যাটেলাইটের নাম আবার দেশটির স্থপতি মহান নেতা বাঙালীর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে। সব মিলিয়ে এ এক মহাশুভক্ষণ গোটা জাতির জন্য।