নিজস্ব প্রতিনিধিঃ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে স্পষ্ট কোনও বক্তব্য না থাকায় আবারও লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও আন্দোলনে যাচ্ছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এমপিওভুক্তির দাবিতে আগামীকাল রবিবার (১০ জুন) থেকে টানা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী।
তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার পর নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ হতাশ। আর এই হতাশা থেকে আবারও তারা লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম আসছে অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ থাকবে। কিন্তু আমরা হতাশ হতাশ হয়েছি। তাই বাঁচামরার মানবিক আবেদন নিয়ে রমজানের ভেতরে শিক্ষকরা রাজপথে নামতে বাধ্য হচ্ছেন।’
অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৫ থেকে ২০ বছর বিনা বেতনে চাকরি করছেন। অনেকের আর চাকরি আছে মাত্র ৫ থেকে ১০ বছর। এ কারণে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আর অপেক্ষায় না রেখে বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এতো বছর পর কোনক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আংশিক সমাধান সমীচীন হবে না। স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু সংখ্যক এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নিলে অসুস্থ প্রতিযোগিতার উদ্ভব ঘটবে। এ কারণে এমপিওভুক্তির সামগ্রিক সমাধান করতে হবে।’
তবে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার বিষয়ে স্পষ্ট কোনও বক্তব্য না থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মনে করেন, ‘এরপরও এমপিওভুক্তিকরণের সুযোগ আছে। আশা করি অর্থমন্ত্রী উনার কথা রাখবেন এবং নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের এটুকু সুযোগ করে দেবেন।’
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে ওই অবস্থান কর্মসূচি চলার এক পর্যায়ে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান। আশ্বাসের ভিত্তিতে অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ওই আশ্বাসের পর সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হচ্ছিল- ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। গত বৃহস্পতিবার (৭ জুন) নতুন অর্থবছরের পেশকৃত বাজেট প্রস্তাবে এমপিওভুক্তির বিষয়ে কোনও কথাই বলেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে নতুন করে হতাশার সৃষ্টি হয়। আর এই হতাশা থেকেই আবারও লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।