বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন

৩৫ বছর ধরে শিকলবন্দি তিনি!

ক্রাইম ফোকাস ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮
  • ১৪৩ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার পিয়ারী খাতুন (৫০) প্রায় ৩৫ বছর ধরে শিকলবন্দি জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন। শিকলে বাঁধা অবস্থাতেই তার খাওয়া, গোসলসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। গত ৩৫ বছরে একদিনের জন্যও শিকলের বাঁধন থেকে মুক্তি মেলেনি মানসিক প্রতিবন্ধী এই নারীর।

জানা যায়, পিয়ারী খাতুন উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের জন্তিহার গ্রামের মৃত নওসের আলীর মেয়ে। বর্তমানে ভাই আব্দুল খালেক ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুনের সংসারে শিকলবন্দি জীবন কাটছে তার।

আব্দুল খালেক জানান, জন্মগতভাবে পিয়ারী অসুস্থ নয়। ১২-১৩ বয়য়ে তার প্রথম মানসিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। পরে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যাও ক্রমশই বেড়েছে। কিন্তু নিরক্ষর বাবা -মা না বুঝে ও সংসারের দারিদ্রতার কারণে তৎকালীন সময়ে পিয়ারীকে চিকিৎসা না করে বিয়ে দেন। বিয়ের পর পরই পিয়ারীর মানসিক সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
পরে বিয়ের ৪-৫ মাস পর স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবার বাড়িতে শিকলে বাঁধা পড়েন পিয়ারী। স্থানীয়রা জানান, তারপর থেকেই দরিদ্র ভাই আব্দুল খালেকের পরিবারে ৬ সদস্যের সংসারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন পিয়ারী। শিকবন্দি অবস্থায় বাড়ির উঠানেই সারাদিন কাটে তার।

আব্দুল খালেকের স্ত্রী আমেনা খাতুন জানান, প্রতিমাসে পিয়ারীর ভরণ-পোষণের জন্য ২-৩ হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ সংসারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মাত্র দুজন।আজ পর্যন্ত মানসিক প্রতিবন্ধী পিয়ারা খাতুন সরকারি কোন সহযোগিতা পাওয়া তো দূরের কথা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও তার ভাগ্যে জোটেনি ।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদত হোসেন বলেন, শিকলে বাঁধা পিয়ারীর কথা তিনি এই প্রথম জানলেন। মানসিক প্রতিবন্ধী পিয়ারী খাতুনকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে সরকারিভাবে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে পিয়ারীর জন্য একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর