নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী আশা ব্যক্ত করে বলেছেন, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সংবিধান সংশোধন করে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগরে হোটেল ৭১-এ বাংলাদেশ মুসলিম লীগ আয়োজিত নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বি. চৌধুরী বলেন, বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে জেলখানায় আটক রাখা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, এই পরিস্থিতিতে কী করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে?
প্রবীণ এই পার্লামেন্টারিয়ান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন উঠলে এই সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে নেই। অথচ তারাই তো মাত্র ১৫ মিনিটে সংবিধান থেকে এ ব্যবস্থা তুলে দিয়েছেন। কায়েম করেছেন একদলীয় শাসন।
বি. চৌধুরী বলেন, অন্যদিকে আমি যখন সংসদে উপনেতা ছিলাম, সেসময় ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর একদিনে তাদের (আওয়ামী লীগ) দাবি মেনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। মাত্র চার মাসের মধ্যে নতুন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী এবার আগের চাইতে আরো বিশাল আকারের বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু বিগত বছরে মহাবাজেটই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। গতবারের সংশোধিত বাজেটই তার প্রমাণ।
বি. চৌধুরী বলেন, এছাড়া বাজেটে যে বিরাট অঙ্কের ঘাটতি দেখানো হয়েছে, তা পূরণ করতে গতবারের চেয়ে দেড়গুণ ঋণ নেয়া হবে বলে বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে ব্যাংকগুলো আরো দেউলিয়া হবে।
তিনি বলেন, বাজেটে নতুন শিল্প বিনিয়োগের উদ্যোগ নেই। নতুন কর্মসংস্থানের কোনো ইঙ্গিত নেই। বিশালাকার বাজেট দিয়ে ভোটারদের ভাওতা দেয়া হয়েছে।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, গতবারের বাজেটে ট্যাক্স, খাজনা বাড়বে না বলা হলেও পরে নির্বাহী আদেশে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পেট্রোল ও যাতায়াত ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। ফলে সাধারণ মানুষের জীবন অতীষ্ঠ হয়েছে। তারপরও মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, গত ১০ বছরে নাকি জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী ভালো করেই জানেন, দ্রব্যমূল্য আর ট্যাক্সের চাপে মানুষের জীবন এখন দুর্বিষহ। বাজেটে দুর্নীতি দমনে কোনো দিক-নির্দেশনা নেই।
অনুষ্ঠানে আ.স.ম আবদুর রব ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়ে বলেন, পাখির মতো মানুষ মারার বিচার করতে হবে।
এতে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রমাণ নেই অজুহাত দেখিয়ে একজন এমপিকে রক্ষা করা হয়েছে। অন্যদিকে ১৬৭ জন মানুষকে বিনা বিচারে মারা হয়েছে। অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের জন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজার সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরো বক্তৃতা করেন মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, নেজামে ইসলামী পার্টি একাংশের সভাপতি মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, মুসলিম লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুল ইসলাম, বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, আবদুর রউফ ইউসুফী, সৈয়দ নসরুল হাসান,আকবর হোসন পাঠান প্রমুখ।