নিজস্ব প্রতিনিধিঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ মার্চ বরিশাল বিভাগের ২০ উপজেলাকে শতভাগ ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন। ওইদিন চতুর্থ পর্যায়ে নির্মিত জমিসহ ঘর বিতরণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালে উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময় করবেন। দুই হাজার সাতটি পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে ব্যাপক কর্মব্যস্ততার মধ্যে রয়েছেন বিভাগীয়সহ স্ব স্ব জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান নতুন নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শণ করেছেন। তিনি (বিভাগীয় কমিশনার) বলেন, বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সাথে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালে কথা বলবেন। তিনি আরও বলেন, পিছিয়ে পড়া মানুষদের সবার আগে সেবা প্রদানের এ আশ্রয়ণ প্রকল্প সারাবিশ্বে ‘অর্ন্তভূক্তিমূলক শেখ হাসিনা মডেল’ হিসেবে পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের জমিসহ পাকা ঘর অসহায় মানুষের মুখে অনাবিল হাসি ফুটিয়েছে। আশ্রয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ সবধরনের সহায়তা এবং পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, চতুর্থ পর্যায়ে নির্মিত ঘর বিতরণের মাধ্যমে বিভাগের ছয় জেলার ২০টি উপজেলাকে প্রধানমন্ত্রী গৃহ ও ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন। এরমধ্যে বরিশাল জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে বাবুগঞ্জের ১৩০টি, মুলাদীর ৩০টি, বাকেরগঞ্জের ২০০টি, বানারীপাড়ার ১৪২টি ও উজিরপুর উপজেলার ১৬০টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের জমিসহ ঘর পাচ্ছেন। এ ছাড়া পটুয়াখালী জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পটুয়াখালী সদরের ছয়টি, দুমকির ২৯টি, মির্জাগঞ্জের তিনটি, গলাচিপার ৮৩টি ও রাঙ্গাবালী ১১৮টি পরিবার। ভোলা সদর উপজেলার ৩০টি। বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার ৯২টি। পিরোজপুরের ছয়টি উপজেলার মধ্যে নাজিরপুরে ১৫২টি, নেছারাবাদ উপজেলায় ৮০টি, কাউখালি উপজেলায় ১০০টি, ইন্দুরকানি ৭৪টি, মঠবাড়িয়ার ১৭৪টি ও ভান্ডারিয়া উপজেলার ৭৩টি। ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ২০০টি ও রাজাপুরে ১৩১টি পরিবার জমিসহ ঘর পাবেন। চতুর্থধাপে নির্মিত এ ঘর হস্তান্তরের মধ্যদিয়ে ওইসব উপজেলাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমি ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন। বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অতীতে স্বপ্নের এ পাকা ঘর পাওয়ায় গৃহ ও ভূমিহীন অসহায় পরিবারগুলোর জীবনমান বদলে গেছে। এই মানুষগুলোর একসময় ছিলোনা নিজস্ব কোন স্থায়ী ঠিকানা। তারা মানবেতর জীবনযাপন করতেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারে বাসস্থানসহ নানাবিধ সুবিধার ছোঁয়ায় অসহায় পরিবারগুলোর ভাগ্যের চাকা খুলে গেছে। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ গোলাম ফারুক বলেন, মাদার অব হিউম্যানিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ মার্চ বিভাগের অন্যান্য উপজেলার সাথে বানারীপাড়া উপজেলাকে শতভাগ ভূমি ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন। উপকারভোগীসহ বানারীপাড়াবাসীর সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়ালি কথা বলবেন। তাই এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুরো উপজেলাজুড়ে উৎসবমূূখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতিমা আজরিন তন্বী বলেন, দেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণা বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বানারীপাড়া উপজেলা প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, উপজেলার আটটি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৩৮০টি পরিবারের জন্য দুই শতক করে জমির দলিলসহ সেমি পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের মাধ্যমে পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডসহ উপজেলার বাইশারী, সলিয়াবাকপুর ও ইলুহার ইউনিয়নে চতুর্থ পর্যায়ে নির্মিত জমিসহ আরও ১৪২টি সেমি পাকা ঘর উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।