রোববার দুপুরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের টেকনিক্যাল অফিসার আতিকুর রহমান।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের আইই, এইআরই, সাভারের এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার বাড়ি গাজীপুরে। তার স্বামীর নাম তন্ময় মজুমদার।
আতিকুর রহমান বলেন, পূজা এবং আমি একই কক্ষে কাজ করতাম। এক সময় তিনি আমার কাছেই থিসিস করতেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে আমাদের এখানে যোগদান করেন। প্রতিদিন ঢাকা থেকে এসে সাভারের আশুলিয়ায় অফিস করতেন তিনি। পূচা সাড়ে পাঁচ মাসের বেশি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
অন্যদিকে, একই ঘটনায় নিহত আরেক ব্যক্তি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (গনকবাড়ি, সাভার) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আরিফুজ্জামান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী।
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, এই দুর্ঘটনায় পরমাণু কমিশনের গাড়িটির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আসলে প্রথমে দুর্ঘটনার খবর যেমন পেয়েছি তেমনই বলেছিলাম। পরে ভিডিও ফুটেজ দেখে আসল কারণ জানা গেছে। সেইফ লাইনের সেই বাসের কারণই এই দুর্ঘটনা। আমরা সেই বাসটির চালক ও বাসটির কাগজপত্র চেক করেছি।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাভারের বলিয়াপুর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুটি বাস ও একটি ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকার, প্রকৌশলী কাউসার আহম্মেদ ও পরমাণু শক্তি কমিশন স্টাফ বাসের চালক রাজিব হোসেন মারা যান। এ ঘটনায় বাসে থাকা আরো ৪০ যাত্রী আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে কুষ্টিয়া থেকে গরুবোঝাই ট্রাক ও সেইফ লাইন নামের একটি বাস যাচ্ছিল। সেইফ লাইনের বাসটি হঠাৎ বাঁ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসকে ধাক্কা দেয়। এরপর ডান পাশে থাকা গরুবোঝাই ট্রাকটিকে সামনের দিকে ধাক্কা দিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে মহাসড়কের আরিচামুখী লেনে চলে আসে। পাশে জায়গা না থাকায় ট্রাকটিও সড়ক বিভাজকের ওপরে উঠে আরিচামুখী লেনে চলে আসে। এ সময় আরিচামুখী লেনে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের একটি স্টাফ বাসের সামনের দিকে সজোরে ধাক্কা দেয় সেইফ লাইনের বাসটি। স্থানীয় লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সাভারের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান।