করিম বেনজেমার দুর্দান্ত গোলে বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স বিরতির পর ছয় মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যায়। স্ট্রাইকার কোরনেলিয়াসের গোলে ৬৮ মিনিটে সমতা ফেরানোর পর ৮৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোলে দলের জয় নিশ্চিত হয়। পরাজয়ের পাশাপাশি কিলিয়ান এমবাপ্পে ও রাফায়েল ভারানের ইনজুরির কারনে ফ্রান্সের জন্য কালকের রাতটা ছিল দারুন হতাশার।
এমবাপ্পে হাঁটু ও ভারানে হ্যামস্ট্রিং সমস্যায় পড়েছেন বলে নিশ্চিত করে ফ্রান্সের সহকারী কোচ গাই স্টিফান বলেছেন, ‘এবারের মৌসুমে আমাদের দলে এমন অনেকেই রয়েছে যারা অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছে। একেবারে ম্যাচ না খেলা খেলোয়াড়ের অভাব রয়েছে।’
কাল ফ্রান্সের মাঠটি ৭৫ হাজার ৮৩৩জন দর্শকের উপস্থিতিতে প্রায় কানায় কানায় পূর্ন হয়ে উঠেছিল, এর মধ্য ছিল ১৪ হাজার ড্যানিশ সমর্থক। ম্যাচ শুরুর আগে স্টেডিয়ামের পরিবেশ ছিল একেবারেই শান্ত। অথচ মাত্র ছয়দিন আগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মধ্যকার ম্যাচের পরিবেশ ছিল ভিন্ন। ম্যাচ শুরুর আগেই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
করোনা মহামারীর কারনে ২০১৯ সালের নভেম্বরের পর এটি ছিল ফ্রান্স জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম ম্যাচ যেখানে দর্শকের কোন বিধিনিষেধ ছিল না। স্বাগতিক সমর্থকরা তাই স্বাভাবিক ভাবেই লেস ব্লুজদের বিজয়ের আশা নিয়েই মাঠে এসেছিল। গত বছর ফাইনালে স্পেনকে পরাজিত করে নেশন্স লিগের শিরোপা জিতেছিল ফ্রান্স। লিগ এ’র গ্রুপ ওয়ানের চার ম্যাচের মধ্যে কালই ছিল প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচের পরেই খেলোয়াড়রা কয়েকদিনের বিশ্রামে যাবে।
বাবার মৃত্যুর কারনে কাল ফ্রান্সের ডাগআউটে ছিলেন না কোচ দিদিয়ের দেশম। বিরতির পর ইনজুরির কারনে আর মাঠে নামতে পারেননি এমবাপ্পে। তার পরিবর্তে মাঠে নামেন ক্রিস্টোফার এনকুনকু।
৫১ মিনিটে ফ্রান্সের গোলের পিছনে আরবি লিপজিগের এই ফরোয়ার্ডের অবদান ছিল। গত সপ্তাহে এই মাঠেই রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছেন বেনজেমা।
এনকুকুর সঙ্গে বল আদান প্রদান করে ড্যানিশ রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে বেনজেমা ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেন্টার-ব্যাক ভারানে এরপর ইনজুরিতে পড়ে মাঠত্যাগে বাধ্য হন। এই সুযোগে নড়েচড়ে বসে ডেনমার্ক।
৬৮ মিনিটে পিয়েরে-এমিলে হোবার্গের ফ্লোটেড এসিস্ট থেকে দলের পক্ষে সমতা ফেরান কোরনেলিয়াস। এর পরমুহূর্তেই আন্দ্রেস স্কোভ ওলসেনের ড্রাইভ রুখে দেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লোরিস।
এনগোলো কান্টের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসলে পুনরায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি ফ্রান্সের। ৮৬ মিনিটে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনকে হতাশ করেন লোরিস। দুই মিনিট পর কোরনেলিয়াস অফসাইড ট্র্যাপ ফাঁকি দিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
এবারের কাতার বিশ্বকাপে ডেনমার্কের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে ফ্রান্স। এই পরাজয়টা ফ্রান্সের জন্য একটি সতর্কবার্তাও বটে। আগামী সোমবার নেশন্স লিগের পরবর্তীয় ম্যাচে ফ্রান্স ক্রোয়েশিয়ার ও ডেনমার্ক অস্ট্রিয়ার মোকাবেলা করবে।
শুক্রবার দিনের আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে অস্ট্রিয়ার কাছে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়েছে। এদিকে নেদারল্যান্ড ব্রাসেলসে বেলজিয়ামকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে।