চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:ভোলা ছেড়ে ২০০৪ সালে চলে আসেন চট্টগ্রাম। এরপর নিমতলা বিশ্বরোড এলাকায় শুরু করেন বসবাস। চট্টগ্রামে আসার পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১১ বছর গাড়ি চালকের হেলপার হিসেবে কাজ করলেও একসময় বিআরটিএ থেকে পান হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স।
এর মধ্যে ২০০৬ সালে একবার হেলপার থাকা অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে পড়েন মারাত্মক দুর্ঘটনায়। এতে ডান পা পঙ্গু হয়ে ওই পায়ের সম্পূর্ণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় ভারী যানবাহনের লাইসেন্সের আবেদন করলেও পঙ্গুত্ব ও পায়ের শক্তি হারানোর কারণে তা প্রদান করেনি বিআরটিএ। তবুও লাইসেন্স ছাড়াই নিয়মিত চালিয়ে আসছিলেন ভারী যানবাহন।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনায় ট্রাকচালক মোহাম্মদ রিপনকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার এসব তথ্য তুলে ধরেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ। এর আগে, সোমবার রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার রশিদ বিল্ডিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনায় ট্রাকচালক মোহাম্মদ রিপন
গ্রেফতার রিপন ভোলার লালমোহন উপজেলার মহেশখালী এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ বলেন, ঘাতক ট্রাকটির মূল চালক ছিলেন নুরনবী। ঘটনার দিন কক্সবাজারের পেকুয়া মেরিন ড্রাইভ ও ফোর লেনের চলমান সড়ক নির্মাণের পাথর বোঝাই করে নেয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু এর আগে টানা ১০ দিন নির্ঘুম থেকে ক্লান্ত থাকায় সেদিন মালিকের সম্মতিতে নুরনবীর পরিবর্তে গাড়ি নিয়ে বের হন রিপন। পেকুয়ায় পাথর আনলোড করে আসার সময়ই এ দুর্ঘটনা ঘটান তিনি।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটিতে কোনো হেলপার ছিল না। গাড়িটি অত্যন্ত বেপরোয়া গতি ও নিয়ন্ত্রণহীন ছিল। দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি মূলত বাম লেন থেকে (কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামমুখী) ডান লেনে গিয়েই বিপরীত দিক থেকে আসা প্রাইভেটকারটিকে চাপা দেয়। ওই সময় প্রাইভেটকারটি থেমে গেলেও পায়ের পঙ্গুত্ব ও শক্তি না থাকার কারণে ব্রেক করতে পারেননি রিপন। এতে প্রাইভেটকারে থাকা পাঁচ বন্ধুর চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার ভোরে লোহাগাড়ার আধুনগর এলাকায় ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- হারুনুর রশিদ হীরণ, খোরশেদ আলী সাদ্দাম, রিজভী শাকিব, মনছুর আলী ও মুহাম্মদ হুমায়ুন।