ধর্ম ডেস্ক:আল্লাহ সৃষ্টিজগৎ পরিচালনায় বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন শ্রেণির ফেরেশতা নিয়োজিত করে রেখেছেন। আলোচ্য হাদিসে সেসব ফেরেশতার কথা বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন। আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা পাপীদের কাছে আসেন না। নতুবা বান্দার হিসাব সংরক্ষণকারী ফেরেশতারা সর্বদা সর্বাবস্থায় মানুষের সঙ্গে থাকেন এবং তাদের ভালো ও মন্দ কাজ লিপিবদ্ধ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি মনে করে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও মন্ত্রণার খবর রাখি না? অবশ্যই রাখি। আমার ফেরেশতারা তাদের কাছে থেকে সব কিছু লিপিবদ্ধ করে।’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৮০)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতারা তিন ব্যক্তির নিকটবর্তী হয় না। তারা হলো—নাপাক ব্যক্তি, মদ্যপ ও খালুক (রংযুক্ত সুগন্ধি) দ্বারা রং গ্রহণকারী।’ (সুনানে তাবারানি, হাদিস : ১২০১৭)
আলোচ্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) তিন শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করেছেন। যারা পাপে লিপ্ত থাকার কারণে ফেরেশতারা তাদের কাছে আসে না। ফলে তারা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়।
ফেরেশতা যাদের নিকটবর্তী হন না
উল্লিখিত হাদিসের বর্ণনা মতে, আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা যাদের নিকটবর্তী হন না তারা হলো-
১. নাপাক ব্যক্তি : নাপাক দ্বারা এমন ব্যক্তি উদ্দেশ্য যার ওপর গোসল ফরজ। ইসলামী শরিয়তের নির্দেশনা হলো কোনো ব্যক্তির ওপর গোসল ফরজ হলে বিশেষ অসুবিধা না থাকতে দ্রুততম সময়ে গোসল করে ফেলবে। গোসল সম্ভব না হলে অন্তত অজু করবে। কোনো ব্যক্তি যদি গোসল ফরজ হওয়ার পরও বিনা প্রয়োজনে গোসল বিলম্ব করে এবং বিলম্ব করা তার অভ্যাসে পরিণত করে, তবে আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা তার নিকটবর্তী হন না।
২. মদ্যপ : মদ ও মাদক বহু অপরাধের উৎস। মাদক একই সঙ্গে মানুষের জীবন ও সম্পদ নষ্ট করে। ইসলামে মাদক ও নেশাদ্রব্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক নেশাদ্রব্য হারাম।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৯০)
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কোরো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। নিশ্চয়ই শয়তান মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণে ও নামাজে বাধা দিতে চাহে। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৯০-৯১)
৩. খালুক দ্বারা রং গ্রহণকারী : ‘খালুক’ এক প্রকারের বিশেষ রংযুক্ত সুগন্ধি, যা জাফরান থেকে উৎপন্ন। ইসলামী শরিয়ত পুরুষকে এমন রঙিন সুগন্ধি ব্যবহারের অনুমতি দেয় না। তবে নারীরা তা ব্যবহার করতে পারে। তাই হাদিসে রংগ্রহণকারী দ্বারা শুধু পুরুষ ব্যবহারকারী উদ্দেশ্য।
আল্লাহ তায়ালা সবাইকে এমন গর্হিত কাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দিন। আমিন।